Wednesday 14 May 2014

সাদা পরী।

যতই ভুলতে চাই ততই যেন মনে পরে। সেদিন তোমাকে দেখে মনে হলো যেন সাদা পরী। আহ! আমি মরি মরি, তোমায় ভুলতে না পারি। সাদা পরী আমার সকাল হয় তোমাকে মনেকরে আবার, আমার চোখে ঘুম নেমে আসে তোমায় হৃদয়ে ধারণ করে। আমার ইচ্ছে করে তোমাকে জড়িয়ে ধরে পঙ্খীরাজের পিঠে চড়ে দেই সাত সমুদ্র পারি।

এদেশের চলচ্চিত্রকে ধ্বংসের পায়্তারা।

অনেকেই জানে না আমাদের দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নাম কী। তারা জানে আমেরিকায় হলিউড, শাহরুখ সালমান দের বোম্বেতে বলিউড। তারা এটাও জানে যে জিৎ দেবদের ইন্ডাস্ট্রির নাম টালিউড। তারা শুধু এটাই জানে না যে নিজেদের দেশের ফিল্ম ইনডাস্ট্রির নাম ঢালিউড। শাকিব খান আর অনন্ত জলিল মানে হলো হাসি আর হাসি। এটা বড়ই দুঃখের ব্যাপার। গত কয়েক বছরের তুলনায় এখন আমাদের ফিল্মের অনেকটা উন্নতি হয়েছে, অনেকেই চেষ্টায় আছেন উন্নতির জন্য। কিন্তু আমরা কি করছি? ঘরে বসে ভারতীয় বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মুভি দেখছি আর বলছি বাংলা সিনেমা হইলো বস্তা পঁচা। কেউ বুঝতে চেষ্টা করি না, টাকা উঠাতে পারলে প্রযোজক টাকা ঢালবে না কেন আর টাকা উঠাতে না পারলে বেশি টাকা ঢালবে কেন? বলিউড থেকে বছরে প্রায় ৩০০ ছবি মুক্তি পায় আর সেখান থেকে সালমান আমিরদের ৫ থেকে ৬ টা ছবি আমরা দেখি সাধারণতো, আর সেই শত কোটি টাকা বাজেটের ছবির সাথে ১ থেকে দের কোটি টাকার বাংলা ছবির তুলনা করি। এ যেন পিঁপড়াকে খেয়ে খেয়ে হাতির মত ওজন বানাতে বলার মত। খুব সহজে বলে দিতে পারেন কম বাজেটে ভাল ছবি বানানো যায় যেমন মনপুরা। হ্যাঁ, আপনাদের সেই এক কথা সেটা হলো মনপুরা। কোথায় সেই মনপুরার পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম? পাঁচ বছর আগে এক মনপুরা বানিয়ে এখন তার খোঁজ নেই কেন? এক সময় আমার উপজেলায় পাঁচটি সিনেমা হল ছিল আজ একটিও নেই। মূলত মনপুরা টাইপের সিনেমা দিয়ে সারাবছর হল চালানো যায় না, মনপুরা বানাতে হয় প্রতি যুগে যুগে একটি করে তাহলেই মানুষ পছন্দ করে। শাকিব খানের নাম শুনলে বেশিরভাগ স্মার্ট নামের ছেলে মেয়েরা নাক ছিটকায় আরিফ আর হোসাইন রা সাকিব আল হাসানকে নিয়ে লেখে কেননা বিশ্বের মানুষ তাকে চেনে আর শাকিব খানকে চেনে বাংলার সাধারণ মানুষ তাই তাকে নিয়ে লেখে না। নাক ছিটকানো মানুষ গুলোকি কখনও স্টার সিনেপ্লেক্স আর ব্লকবাস্টার এর বাইরে মফস্বল শহর গুলোতে গিয়ে দেখেছিলেন সেখানে হল মালিকদের পেট চালায় কে? দেশের বেশিরভাগ সিনেমা হলে এখনও অশ্লীল সিনেমা চলে কেননা এদেশের ইন্ডাস্ট্রি পর্যাপ্ত সিনেমা দিতে পারে না আর কিছু হল মালিকেরা চলে শাকিব খানের ছবি দিয়ে। অথচ অনেকেই বলেন শাকিবের উচিৎ বছরে দুই একটি সিনেমা করা। কিছুদিন আগে কোলকাতার প্রসেনজিত, জিৎ এরা এসেছিলেন বাংলাদেশে। এফডিসিতে বৈঠকও করেছেন এদেশের অনেকের সাথে। পত্রিকার মাধ্যমে হয়্তো এসব আপনারা জানেন। তারা এসেছিলেন বাংলাদেশে ভারতীয় পেঁয়াজ আলুর মতো ভারতীয় চলচ্চিত্রের বাজার তৈরী করতে। তারা তিস্তার পানি আটকিয়ে উত্তর বাংলাকে মরু চর করে রেখেছেন। যখন এদেশের চাষীরা আলুর চাষ করে লাভের মুখ দেখতে চায় ঠিক তখনই ওরা কম দামে আলু পাঠিয়ে চাষিদের মুখের হাসি কেরে নেয় আবার কিছুদিন পর চাষীদের আলু শেষ হলে তারা তাদের আলুর দাম অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। এভাবেই তারা আমাদেরকে শোষণ করছে। আর আমরা নিজেদের দিকে তাকিয়ে নিজেরা হাসছি। নিজেদের চলচ্চিত্রের করুণ অবস্থা থেকে উত্তোলনের চেষ্টা না করে বিদেশি চলচ্চিত্রের দিকে ঝুকছি, এ যেন নিজের মা কানা বলে প্রতিবেশি মহিলাকে মায়ের জায়্গায় বসানোর মতো। এই ফেসবুকে দেশপ্রেম নিয়ে লেখার মত অনেক ছেলে মেয়ে আছে যারা শত শত লাইক পায় এগুলা লিখে কিন্তু তাদের লেখায় চলচ্চিত্র ব্যাপারটি উঠে আসে না কেন এটা ভাববার বিষয়। তাদের হয়্তো ধারণা বাংলায় সিনেমা হয় না হয় শুধু ছিঃনেমা। তাদের কাছে সানি লিওন হলো স্টার অভিনেত্রি আর মৌসুমী শাবনুর হলো খ্যাত, কেননা সানি লিওন পরে বিকিনি আর মৌসুমী শাবনুরেরা পরে শাড়ি অথবা সালোয়ার কামিজ। কোথাও লেখা দেখেছিলাম একটি দেশকে ধ্বংস করতে হলে প্রথমে তার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে হবে। ঠিক সেই কাজটি আজ হতে চলেছে, প্রসেনসিতেরা এদেশে বাজার তৈরীর সরাসরি চেষ্টায় সফল না হয়ে নিয়েছে অন্য পথের অবলম্বন আর সেটার নাম হলো যৌথ প্রযোজনা। মূলত চলচ্চিত্র জগতের কিছু মানুষকে কিনে নিয়ে কোলকাতার দাদারা অর্থাৎ একাত্তরের রাজাকার দালালদের মতো আজ কিছু ভারতের দালাল সৃষ্টি হয়েছে। তারা যৌথ প্রযোজনার নামে ভারতীয় বাংলা ছবি এদেশে প্রচারের ব্যবস্থা করছে, আর সেই কাজে তারা সফল হয়েছে। আর এর দ্বারাই ধীরে ধীরে বিলুপ্তি ঘটবে ডালিউড নামের ইনডাস্ট্রির যদি না আমরা রুখে দাড়াই। আফসোস, ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রতি ভারতীয় সরকারের যেমন সুনজর রয়েছে আমাদের সরকার তেমন করে আমাদের চলচ্চিত্রকে দেখে না। কয়েকদিন আগে অপু বিশ্বাসের পছন্দের ছেলে কেমন প্রথম আলোর এমন একটি রিপোর্টে এদেশের ভদ্র ছেলেরা খুব বাজে কথা লিখেছে। প্রায় সবার কমেন্ট ছিল খারাপ ভাষার। অথচ, অপু বিশ্বাসের কোন সেক্স ভিডিও বাজারে আসে নাই আবার কারো সাথে রাত কাটাবার রিপোর্টও পাওয়া যায় নাই, তাহলে কেন এমন মন্তব্য? বাংলা সিনেমার নায়িকা বলে? আমরা কতোটা বৈষম্যের শিকার সেটা সবাই জানে। এদেশে দেশীয় টিভি চ্যানেলের চেয়ে ভারতীয় চ্যানেল বেশি অথচ আমাদের একটি চ্যানেলও ওদের দেশে দেখানো হয় না। আমরা ওদের সিনেমা থেকে ড্রামা সিরিয়ালের সবাইকেই চিনি প্রায় কিন্তু ওরা আমাদের বড় বড় তারকাদের চেনে না কারণ ওদের মিডিয়া ওদেরকে জানায় না অথচ আমাদের মিডিয়া সারা জীবন ভারতের দালালি করে আসছে। এই সময় ভারতীয় চলচ্চিত্র যৌথ প্রযোজনার নামে আমদানী কতো বড় হুমকি সরূপ তা আর মনেহয় আপনাদের বুঝাতে হবে না। এখন নিজ নিজ অবস্থানে থেকে চেষ্টা করুন যা করতে পারেন। www.facebook.com/shadi.bd

Tuesday 13 May 2014

একজন পতিতার গল্প

পতিতা পল্লীর সব চেয়ে পরিচিত নাম আলেয়া। মেয়েটা বছর তিনেক হল এসেছে এই পতিতালয়ে। এর আগে ছিল অন্য একটিতে। সেখানেই তার প্রতারক প্রেমিক তাকে বিক্রি করে দিয়েছিল। আলেয়ার চেহারা যেমন সুন্দর তেমন সুন্দর তার শরীরটা। একেবারে খদ্দেরদের জীভে পানি নিয়ে আসার মত। তাইতো তাকে এখানে আনা হয়েছে। আলেয়ার খদ্দেররা খুব নামী দামী লোক। তাদের খুশি করতে পারলে মোটামুটি ভালই কামাই হয়। আলেয়া কিন্তু খারাপ পথে উপার্জিত টাকা খারাপ পথে নষ্ট করে না। তাদের পতিতালয় বস্তির একপাশে অবস্থিত। বস্তিতে অনেক সাধারণ মানুষও বাস করে। সেখানে মঈন নামের ষোল সতের বছর বয়সের একটি ছেলেও থাকে। মঈন এবার ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেবে। খুব ভাল ছেলে এই মঈন। চেহারাতেও ভদ্রতার ছাপ রয়েছে তবে মঈন বড়ই একা তার কেউ নেই। তাই আলেয়া মঈনের পড়াশুনার খরচ চালায়। মঈনকে সে ছোট ভাইয়ের মতই দেখে। মঈনও তাকে বোনের মত দেখে এবং আপা বলে ডাকে। একদিন মঈনের একজন ক্লাস মেট আসল মঈনের খুপড়ি ঘরে। তার বন্ধুরা সবাই জানে যে মঈন খুব গরিব কিন্তু খুব ভাল ছাত্র হওয়ায় শিক্ষকগণ এবং সহপাঠীরা তাকে অবহেলা করে না। মঈনের বন্ধুটি মোটামুটি বড়লোকের ছেলে। সে মঈনের কাছ থেকে পরীক্ষায় যাতে সাহায্য পায় সেজন্য স্পেশাল অনুরোধ জানাতে এসেছে। মঈন আর তার বন্ধু যখন কথা বলছিল সেসময়ে আলেয়া প্রতিদিনের মত মঈনের খোঁজ নিতে মঈনের ঘরে ঢুকল। মঈনের মুখে হাসি ফুটে উঠে বোনকে দেখে। কিন্তু মঈনের বন্ধুর চোখে বিস্ময় আর আলেয়ার আতঙ্ক। মঈন আলেয়াকে উদ্দেশ্য করে বলল, -এস। কিন্তু আলেয়া না এসে বেরিয়ে গেল। এদিকে মঈনের বন্ধু মঈনের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলল, -মামু, তোরে ভাবছিলাম বোকা পোলাপান, তোর ঘরেতো দেখি সরাসরি মাল আসে। মঈন আগে থেকেই তার বন্ধুর চরিত্র সম্পর্কে জানতো। এখন বুঝতে পারল আলেয়া তার বন্ধুর পরিচিত। তাই সে তার বন্ধুকে চলে যেতে বলল। মঈনের কথায় এমন কিছু ছিল যার জন্য বন্ধুটি কিছু না বলেই বেরিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর আলেয়া ঢুকল। এর মধ্যে মঈন কাঁদতে শুরু করেছে। আলেয়া এসে মঈনের চোখ মুছে দিয়ে বলল, -বোকার মত কাঁদবি নাতো। মঈন বলল, -আপা আর কত দিন? আলেয়া বলল -তোর পড়াশুনা শেষ হলেই আর নয়। -আমি আর পড়ব না।আমি চাকুরী করব। -এক থাপ্পর খাবি ওকথা বললে।তুই কেন এখন ছোট কাজ করবি পড়াশুনা শেষ করে বড় চাকুরী করবি।আর শোন, এসব ছেলের সাথে মিশবি না। মঈন মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। বিঃদ্রঃ ক্লাসমেট কেই সাধারণতো আমরা বন্ধু বলি……তাই এত মাথা ঘামালাম না। #এস Sep 9, 2013 www.fb.com/shadi.bd

“ঐশী”

আজিজ সাহেবের একমাত্র মেয়ের নাম ঐশী। খুবই শান্তশিষ্ট মেয়ে। মা মরা মেয়েটিকে আজিজ সাহেব অনেক কষ্টে এত বড় করেছেন। ঐশী ইন্টারমিডিয়েট সেকেন্ড ইয়ার এর ছাত্রী, পড়াশুনায়ও ভাল। আজিজ সাহেব বসার ঘরে বসে টিভি দেখছেন এমন সময় ঐশী কলেজ থেকে ফিরল। আজিজ সাহেব ডাকলেন তাকে, -আম্মা এইদিকে আস। ঐশী কাছে আসতেই আজিজ সাহেব তার গালে একটা চড় বসিয়ে দিলেন আর বললেন, -এত্ত বড় মেয়ে হয়েছ তার পরেও ধেই ধেই করে ঘুরে বেড়ানো। ঐশী বলল, -আব্বা, আমিতো কলেজ থেকে সরাসরি। -চুপ কর বদমাস মেয়ে।আবার মুখের উপর কথা বলে। ঐশী তার রুমের দিকে রওয়ানা দিল। আজিজ সাহেব আর কিছু বললেন না। ঐশী তার রুমে গিয়ে ভাবছে তার বাবার কি হল, তিনিতো কখনও ঐশীকে মারেন নি তাহলে আজ কেন বিনা দোষে মারলেন? এতক্ষণ ঐশী শুধু অবাক হয়েছে এখন তার চোখে পানি এসে গেল। ওদিকে আজিজ সাহেবের মনেও শান্তি নেই। আজ তাঁর কি হয়েছে তিনি নিজেও বুঝতে পারছেন না। সকালে পত্রিকা পড়ার পর থেকে নিজের মেয়েকে তিনি সহ্য করতে পারছেন না। অসহ্য লাগার তো কোন কারণ নেই। পুলিশ অফিসারের খুনী মেয়ের সাথে তাঁর মেয়েকে কেন তুলনা করবেন তিনি? প্রশ্ন জাগে মনে । তার পরেও কেন যেন অসহ্য লাগে নিজের মেয়েকে। রাতে খাবার টেবিলে আজিজ সাহেব একটি পাগলামী করলেন। কিছুটা খাবার পর নিজের প্লেট মেয়ের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলেন, -এটা তুমি নাও আর তোমারটা আমায় দাও। ঐশী কিছু না বলে নিজের প্লেট এগিয়ে দেয়। খাওয়া শেষ হলে ঐশী চলে যায়। আজিজ সাহেব ভাবেন, ছিঃ ছিঃ ছিঃ এ আমি কি ভাবছি, আমার মেয়ে আমাকে বিষ খাওয়াবে ? মাথায় প্রচন্ড চাপ অনুভব করেন আজিজ সাহেব। ঐশী নিজের ঘরে গিয়ে ভাবে, তার বাবার কি হল আজ? তিনি এমন করছেন কেন? সেই রাতে আজিজ সাহেবের শরীর কাঁপিয়ে প্রচন্ড জ্বর আসে এবং তিনি মুখ দিয়ে শব্দ করতে থাকেন। পাশের রুমে ঐশীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। সে বাবার রুমে এসে দেখে বাবা ছটফট করছেন। ঐশী কাছে গিয়ে তার বাবার শরীর স্পর্শ করে বুঝতে পারে প্রচন্ড জ্বর এসেছে। এত রাতে ডাক্তার আনাও যাবে না।তাহলে সে এখন কি করবে? এসব যখন ভাবছে তখন আজিজ সাহেব চোখ খুলে ঐশীকে দেখে একটা চড় মেরে বললেন, -বদমাশ মেয়ে, বাবাকে মারতে এসেছিস, দূর হ এখান থেকে। ঐশী ওখান থেকে বাথরুমে চলে যায় এমং এক বালতি পানি নিয়ে বাবার মাথার কাছে যায়। আজিজ সাহেব ধীরে ধীরে বলছেন, -সাহস কত, নিজের বাপকে মারতে চায়। ঐশী বাবার শরীর টাকে ধরে মাথাটাকে একটু পাশে নিয়ে বাবার মাথায় পানি ঢালতে থাকে। অন্যদিকে আজিজ সাহেব তাকে গালাগালি করে চলেন। ঘন্টা খানেক পর জ্বর ছেড়ে যায়। আর আজিজ সাহেব ঘুমিয়ে পরেন। ঐশী আর নিজের ঘরে যায় না বাবার মাথার পাশে চেয়ার টেনে নিয়ে বসে থেকে বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। ফজরের আজান দেয়ার সাথে সাথে ঘুম ভেঙ্গে যায় আজিজ সাহেবের। তিনি দেখতে পান মেয়ে তাঁর মাথায় হাত রেখে ঝিমুচ্ছে। গতকালকের এবং গত রাতের ঘটনা তাঁর মনে পড়ল। চোখে পানি এসে গেল তাঁর। এমন ভাল এবং লক্ষী একটা মেয়েকে নিয়ে তিনি কি ভেবেছেন তাই ভেবে চোখ ভিজে যাচ্ছে। তিনি চোখ মুছে মেয়েকে ডাকলেন, -আম্মা উঠ, যাও ওজু করে নামাজ পড়। ঐশী বলল, -আব্বা আপনি ঠিক আছেন? আজিজ সাহেব বললেন, -হ্যাঁ তুমি যাও, আমিও নামাজ পড়ব। ঐশী চলে গেল। আজিজ সাহেব ওজু করে নামাজ পড়লেন। নামাজ শেষে খোদার কাছে মেয়ের জন্য দোয়া করলেন। আরো দোয়া করলেন যেন তাঁর সন্তান ঐশীর মত মেয়ে প্রত্যেক ঘরে জন্ম নেয়। উৎসর্গঃ ভাল ছেলে মেয়েদেরকে..…..….…বুঝতে হবে নামে নয় কামে পরিচয়। Sep 10, 2013 www.fb.com/shadi.bd

রোম্যান্টিক তেলাপোকা।

লাইট অন করে বিছানা থেকে নামতেই পায়ের কয়েক ইঞ্চি দূরে একটা তেলাপোকাকে দেখতে পেলো সুহাসিনী, তাতেই চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে উঠল বিছানায় আর সুহাস কে জড়িয়ে ধরলো। সুহাস ব্যাস্ত হয়ে প্রশ্ন করলো ''কি হয়েছে?'' সুহাসিনী 'তেলাপোকা তেলাপোকা' বলে চিৎকার করতে লাগলো। একথা শুনে সুহাস হাসতে শুরু করলো। তাই দেখে সুহাসিনী ছেড়ে দিল সুহাসকে আর রেগে গিয়ে জানতে চাইলো সে কেন হাসছে? সুহাস বলল, ''দেখেছ তেলাপোকাটা কত্ত ভালো?'' ''ভালো না ছাই, এক্ষূনি আমাকে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতো।'' বলল সুহাসিনী। তাই শুনে হো হো শব্দে হাসতে শুরু করল সুহাস। সুহাসিনী অভিমান করে বলল, হাসবেই তো, ওই তেলাপোকা আমাকে খেয়ে ফেললেই তো তুমি বেঁচে যাও, তাই না? আমি মরলেই তো…… কথা শেষ করতে দিল না সুহাস, তার আগেই সুহাসিনীর মুখে হাত চাপা দিল। বলল, ''ধ্যাৎ আর এরকম বলবে না। তোমাকে ছাড়া আমার চলবে না সেটা তুমি খুব ভালো করেই জানো।'' সুহাসিনী অভিমান ভরা কন্ঠে বলল, ''আমারো চলবে না তোমাকে ছাড়া। তবে তুমি তেলেপোকাকে ভালো বললে কেন?'' সুহাস বলল, ''একটু আগে তুমি আমার সাথে রাগ করে গেস্ট রুমে গিয়ে ঘুমাতে চেয়েছিলে, সেটা হতে দেয়্নি তেলাপোকা। তোমাকে তোমার স্বামীর বুকে ফিরিয়ে দিয়েছে। এই জন্য তেলাপোকা ভাল আর রোম্যান্টিক।'' সুহাসিনী বলল, ''রোম্যান্টিক না ছাই। একটু হলেই আমাকে..…'' সুহাসের হাসির শব্দে চাপা পরে যায় সুহাসিনীর কথা। হাসতে হাসতে সুহাসিনীকে বুকে জড়িয়ে নেয় সুহাস। সুহাসিনীও স্বামীর বুকে মাথা রেখে ভালোবাসা অনুভব করতে থাকে। Feb 22

রাণী ও রাজকন্যার গল্প

নায়্লা তার মেয়েকে ঘুম পারাচ্ছে ঘুম পারানির গান গেয়ে। খুকু ঘুমালো পাড়া জুড়োলো বর্গী এল দেশে। নায়্লার মেয়ে বলল, -বর্গীর গান শুনব না। রাজা রাণীর গল্প বল আম্বু। নায়্লা বলল, -শুদ্ধ করে বল, আম্মু বল। -না। -কেন? -তুমিতো বল, তুমিই আমার মা আবার তুমিই আমার বাবা।তাই আব্বু আর আম্মু মিলে তুমি হয়েছ আম্বু। নায়্লা হেসে ফেলল দেখাদেখি মেয়েও। নায়্লা মেয়েকে জিজ্ঞাসা করল, -তোমার বয়স কত? -ছয় বছর তিন মাস তেত্রিশ দিন। -ও। -আম্বু তুমি না ইদানিং কেমন যেন উদাশীন হয়ে যাচ্ছ। -কেন? -এই যে আমি বললাম, তিন মাস তেত্রিশ দিন। তুমিতো কিছু বললে না? -কি বলব? -কেন আমি চার মাস তিন দিন বললাম না সেটাতো জানতে চাইলে না? -কেন? -এমনি এমনি। বলেই ফিক করে হাসল মেয়েটি। নায়্লা বলল, -তুই বড় হবি কবে? -আমিতো বড় হয়েছি। দেখবে কয়েকদিন পর আমি তোমাকে রোযগার করে খাওয়াব। নায়্লা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মেয়েকে ঘুমানোর জন্য বলল। নায়্লার মনের ভিতর এখন অতীতের স্মৃতি ঘুরে বেরাচ্ছে, সময় মত তা অশ্রু হয়ে বের হবে চোখ দিয়ে। নাহিদের সাথে কাটানো প্রত্যেকটি মূহুর্তের কথা এখন মনে পরছে নায়্লার। নাহিদের সাথে রিকশায় ঘোরা,ফুচকা খাওয়া। ভালবাসা দিবসে সব প্রেমিক প্রেমিকারাই একে অপরকে অন্তত কয়েকটা গোলাপ গিফ্ট করে কিন্তু নাহিদ নায়্লাকে কিছুই দিত না। সে বলতো, আজ তো সবাই সবাই কে দেবে আমি তোমাকে অন্যদিন দেব। নাহিদের পছন্দ না তাই নায়্লাও কিছু কিনতো না নাহিদের জন্য। নাহিদ আইসক্রিম খেতে পারতো না, খেলে তার টনসিল ফুলে যেত। এর জন্য নায়্লাও আইসক্রিম খাওয়া ছেড়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু নাহিদ তাতে রাজী হয়্নি, নায়্লার আইসক্রিম খাওয়া দেখতে নাকি ওর খুব ভাল লাগতো। এক সন্ধ্যায় নায়্লা নাহিদ কে কনকনে শীতের মাঝেও লেকের কোমর পানিতে নামিয়ে রেখেছিল। নাহিদ প্রেমের প্রস্তাব দেয়ার সময় নায়্লাকে বলেছিল তোমার জন্য আমি সব করতে পারি, তাই সেটার পরীক্ষা নিয়েছিল নায়্লা। শীতে যখন নাহিদ কাঁপছিল তখন নায়্লা খিলখিল করে হাসছিল আর সেটা দেখেই নাহিদ এই মানবী পরীটিকে আরো বেশি ভালবেসে ফেলছিল। তাদের সময় ভালোই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করে নায়্লার বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ায় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নাহিদের হাত ধরে নায়্লা। তারা বিয়ে করে একটা ছোট্ট সংসার এর সূচনা করে। নাহিদ একটা ছোট খাটো চাকুরী শুরু করে, সংসারে সাহায্যের করার জন্য নায়্লাও একটা চাকুরীতে যোগ দেয়। নতুন সংসারে তাদের সব চেয়ে সাহায্য করেছে তাদের শিক্ষা। তারা দুজনেই পড়াশুনা প্রায় শেষ করায় তারাতারি চাকুরী যোগার করে সংসার দার করাতে পেরেছিল। সংসার ভালভাবেই চলছিল তাই বছর দুই পর তারা একটা বেবি নেবার সিদ্ধান্ত নেয়। নায়্লার মেয়েটির জন্মের কিছুদিন আগেই দূর্ঘটনায় মারা যায় নাহিদ। নায়্লা কখনও তার পরিবারের কাছে ফিরে যায়্নি, তারাও আসেনি নায়্লার কষ্টের জীবন দেখতে। মেয়েটি মায়ের চোখ থেকে পানি পরা দেখছে, সেও কাঁদছে। সে জানে না তার মা কেন কাঁদছে তার পরেও মায়ের কান্না দেখে সে তার চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। এক সময় মেয়েটি শব্দকরে কাঁদতে থাকে। নায়্লা ঘুরে তাকায় মেয়ের দিকে, তাকে জড়িয়ে ধরে। কিছুক্ষণ পর যখন কান্না থেমে যায় তখন সে মেয়েকে শুইয়ে দেয়। মেয়েটি রাজা রাণীর গল্প শুনতে চায়। নায়্লা শুরু করে, 'এক দেশে এক রাণী আর তার ফুটফুটে রাজকন্যা থাকতো ' মেয়ে প্রশ্ন করে, 'রাজা কোথায়?' নায়্লা বলে, 'রাজা যুদ্ধে গেছে, সে এক মহাযুদ্ধ। যেখানে সবাইকেই যেতে হবে একদিন ' march 24/14 www.fb.com/shadi.bd

২৮ শে মার্চ ২০১৪ এর সন্ধ্যা সাত টার দিকে। ....

সন্ধ্যার পর পরেই ফার্মগেটের রাস্তায় এক লোক আমাকে দেখে বলল, - আঙ্কেল আমাকে একটু সাহায্য করেন। আমি লোকটার দিকে একবার তাকিয়েই চলে আসলাম। আসতে আসতে ভাবলাম, লোকটা কি সত্যি সত্যি বিপদে পরেছে? তখন আবার গতমাসের শেষের দিকের একটি ঘটনা মনে পড়ল। চাঁদপুরের একটি পরিবার(আট দশ বছরের একটা ছেলে আর তিনজন মহিলা) বিপদে পরায় আমার এক বন্ধু তাদের একশ টাকা দিয়েছিল। পকেটে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তাদের বাড়ি ফেরার টাকার পুরোটা আমরা দিতে পারিনি। ওখানকার একজন মহিলা শুধু কথা বলেছিল, তারা নাকি রোগী দেখতে এসেছিল বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে, তাদের সাথের টাকা পয়্সা হারিয়ে গেছে। যাহোক, ওখান থেকে সরে যাবার পর চিন্তা করে বের করেছিলাম মহিলারা আসলে ভুয়া। তাই আজকেও লোকটাকে ভুয়া ভেবে চলে আসছিলাম, কিন্তু হঠাৎ মনে হলো লোকটাতো সত্যিই বিপদে পরতে পারে, তাই ফিরে গেলাম। গিয়ে লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলাম, - আপনার সমস্যা কী? লোকটি বলল, - আমার ক্ষূধা লাগছে। টাকা দিলে কিছু খাইতাম। - ও, কোথায় থাকেন আপনি? - আগে এইখানেই থাকতাম, এখন আসাদ গেইট থাকি। - ও, দুপুরে কিছু খান নাই? - না, যার সাথে থাকি সে ঘরে তালা দিয়ে কোথায় যেন গিয়েছে। - তাই বলে এভাবে রাস্তায় নামবেন? আপনার পরিচিত কেউ নাই নাকি? - না, রাস্তায় মানে। যদি ওরকম হইতাম তাহলে দেখতেনই। আমি নামাজ পড়ি পাঁচ ওয়াক্ত, কুরআন পড়ি। দেখলাম লোকটির পকেটে কটি টুপি রয়েছে। লোকটির স্বাস্থ ভাল, ভুড়ি আছে। দাড়ি ও আছে। যাহোক, আমি বললাম, - ঠিক আছে চলেন, সামনে আমার পরিচিত হোটেল আছে সেখানে আপনাকে ভাত খাওয়াব। লোকটি আমতা আমতা করে বলল, - না, যদি টাকা দিতেন তাহলে রুটি মুটি কিছু খাইতাম, রাতে খাইতাম না হলে সকালে খাইতাম। - চলেন না, আপনাকে তো ভাত খাওয়াতে চাইলাম। - না আপনি যান। - আচ্ছা থাকেন তাহলে, আমার কাছে পর্যাপ্ত টাকা নাই দেয়ার জন্য। কয়েক মিটার আসার পর লোকটি জিজ্ঞাসা করলো, - আপনি আছেন কোথায়? - ও, আমিতো পড়াশোনা করি। - ও আচ্ছা এই কলেজ(তেজগাও) - হ্যাঁ। যখনি লোকটি দেখলো ধরা খেয়েছে তখনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আর কুরআন পড়াকে ব্যবহার করলো। আহা, কতো সহজ। Mar 28/14( www.fb.com/shadi.bd)